ঢাকা, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম) :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় দুই ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরাছবি:
নানা অভিযোগ তুলে প্রাধ্যক্ষ নাজমুন নাহারের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবিতে) উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের একদল ছাত্রী।
ছাত্রীদের অভিযোগগুলোর মধ্যে আছে আসন থেকে বরাদ্দের ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ করা, হল ক্যানটিনের খাবারের মানোন্নয়নে উদ্যোগ না নেওয়া, শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উদাসীনতা, নানা আশ্বাস দিয়ে পরে তা না পূরণ করা ইত্যাদি।
এসব অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন বিভিন্ন বর্ষে অধ্যয়নরত কুয়েত মৈত্রী হলের অর্ধশত শিক্ষার্থী। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
একপর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবনে যায় আন্দোলনকারী ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধি দল৷ আলোচনা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা বেরিয়ে আসেন৷ পরে অন্য ছাত্রীদের নিয়ে তাঁরা কুয়েত মৈত্রী হলের দিকে রওনা হন৷ এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি ছাত্রীরা৷ প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ছাত্রীদের হল পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসেন৷
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কুয়েত মৈত্রী হলের এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানে অন্য হলে আমাদের সহপাঠীরা প্রথম বর্ষে সিট পেয়ে গেছে, সেখানে তৃতীয় বর্ষ শেষ হতে চললেও আমরা সিট পাইনি, গণরুমে থাকছি। আমাদের আসন না দিয়ে হল প্রশাসন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট দিচ্ছে। জানতে চাওয়া হলে কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে, উপাচার্য চলমান শিক্ষাবর্ষকে সিট দেওয়ার নিয়ম করেছেন।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের কি সিট পাওয়ার অধিকার নেই? আমরা যখন বলেছি যে সিট দিতে হবে, তখন হল প্রাধ্যক্ষ ভাইভার নামে নাটক সাজিয়েছেন। তিনি দুই দিনের মধ্যে আমাদের স্থানীয় অভিভাবক ও গ্রাম থেকে মা–বাবাকে নিয়ে আসতে বলেছেন। সিট পাওয়ার আশায় আমরা কষ্ট করে অভিভাবক ও মা–বাবাকে এনেছি। সেই ভাইভার ছয় মাস হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত ফলাফল বা সিট কিছুই আমরা পাইনি। প্রাধ্যক্ষ সিট নিয়ে ডিপ্লোম্যাসি করছেন।’
এই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ‘সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার এক মাসের মধ্যে প্রাধ্যক্ষের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে আমাদের বলেছেন, প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু আমরা আর তা চাই না। প্রাধ্যক্ষ অনেক আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কিছুই করেননি। তাই আমরা এই মুহূর্তে তাঁর পদত্যাগ চাই।’
আরেক ছাত্রীর অভিযোগ, ‘কুয়েত মৈত্রী হলে পর্যাপ্ত পাঠকক্ষ নেই। পর্যাপ্ত আবাসিক শিক্ষকও নেই। পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা যথাযথ নয়। ক্যানটিনে বেশি দামে নিম্নমানের খাবার বিক্রি হয়। হল প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে সম্পূর্ণ উদাসীন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রাধ্যক্ষ নাজমুন নাহারের মুঠোফোনে একাধিক কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।